সুস্থ থাকার জন্য ম্যারাথন দৌড়ানো একেবারেই জরুরি নয়

 আমি সবসময়ই বলি, সুস্থ থাকার জন্য ম্যারাথন দৌড়ানো একেবারেই জরুরি নয়। আল্ট্রা ম্যারাথন বা ৬/১২/২৪/৩৬ ঘণ্টার স্টেডিয়াম রান তো দূরের কথা। মানুষের শরীরের জন্য সর্বোচ্চ ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত দৌড়ানো সাধারণত নিরাপদ। এর বেশি দৌড়ানো অনেক সময় শরীরের জন্য এক ধরনের শাস্তিতে পরিণত হয় এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সাময়িক ক্ষতি করতে পারে।



যদি কেউ ধীরে ধীরে সঠিক প্রশিক্ষণ, পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ (হাইড্রেশন) এবং সঠিক পুষ্টির (ফুয়েলিং) মাধ্যমে দীর্ঘ দূরত্বে দৌড়ানোর সঙ্গে নিজেকে অভ্যস্ত করে নিতে পারে, তাহলে সেটি তার জন্য ঠিক আছে। কিন্তু এটি সবার পক্ষে সম্ভব নয়। মোট জনসংখ্যার এক শতাংশেরও কম মানুষ বাস্তবসম্মতভাবে এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—দীর্ঘ দূরত্বের দৌড়ে চোট বা ইনজুরি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কোনো না কোনো সময় প্রত্যেক দৌড়বিদই কম-বেশি ইনজুরির মুখোমুখি হয়। প্রতিযোগিতার সময় ইনজুরি হওয়া খুবই সাধারণ বিষয়। তবে আগে থেকেই ইনজুরি থাকা অবস্থায় কোনো দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া চরম বোকামি এবং তা মারাত্মক, এমনকি প্রাণঘাতী পরিণতির দিকেও নিয়ে যেতে পারে।
আমার পরামর্শ:
যারা নতুন দৌড় শুরু করতে চান:
১. ধীরে শুরু করুন।
২. রান/ওয়াক পদ্ধতিতে দৌড়ান।
৩. প্রতি সপ্তাহে দৌড়ের পরিমাণ সর্বোচ্চ ১০% বাড়ান।
৪. ৩ মাস পর সপ্তাহে একদিন দ্রুতগতির দৌড় যোগ করুন।
৫. সপ্তাহে ৫ দিন দৌড়ান।
যারা দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চান:
১. প্রথমে ৫ কিলোমিটার দৌড় সম্পন্ন করুন।
২. নিয়মিতভাবে ৫ কিলোমিটার দৌড়ান।
৩. ৩ মাস পর ১০ কিলোমিটার দৌড়ান।
৪. নিয়মিতভাবে ১০ কিলোমিটার দৌড় চালিয়ে যান (মাসে ৮/১০ বার) ।
৫. ৬ মাস পর ২১ কিলোমিটার (হাফ ম্যারাথন) দৌড়ান।
৬. নিয়মিতভাবে ২১ কিলোমিটার দৌড়ান (মাসে একবার)।
৭. ১ বছর পর পূর্ণ ম্যারাথনের কথা ভাবতে পারেন।
উপসংহার:
দৌড় কোনো তাড়াহুড়োর বিষয় নয়, এটি আজীবনের একটি যাত্রা। মেডেল, দূরত্ব বা সামাজিক স্বীকৃতির চেয়ে স্বাস্থ্য সবসময় অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। ধৈর্যের সঙ্গে এগোন, শরীরের সীমাবদ্ধতাকে সম্মান করুন এবং অভিযোজন ও বিশ্রামের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিন। টেকসই দৌড়চর্চা আসে ধারাবাহিকতা, শৃঙ্খলা এবং ইনজুরি-মুক্ত প্রশিক্ষণ থেকে—দ্রুত সাফল্যের পেছনে ছোটা থেকে নয়,

লিখেছেনঃ Nripen Chowdhury

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ